শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন

ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহের পথ খুলে দিল যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহের পথ খুলে দিল যুক্তরাষ্ট্র

স্বদেশ ডেস্ক:

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তাদের পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো ইউক্রেনকে এফ-১৬ এর মতো আধুনিক যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে পারবে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভ্যান বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার জাপানে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে আগত নেতাদের তার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন।

এ সিদ্ধান্তের ফলে নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ডেনমার্কসহ বেশ কিছু দেশ তাদের নিজেদের কাছে থাকা এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেনকে দিতে পারবে।

যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেন অনেক দিন ধরেই চাইছিল এবং এগুলো পাওয়ার পথ উন্মুক্ত হওয়া তাদের জন্য এক বড় খবর।

ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একে এক ‘ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত’ বলে অভিহিত করেছেন।

তবে রাশিয়া বলেছে, কোনো দেশ যদি ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেয়, তাহলে তারা বিরাট ঝুঁকির মুখে পড়বে।

রুশ সরকারি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার গ্রুশকো বলেছেন, পাশ্চাত্যের দেশগুলো উত্তেজনা বাড়ানোর রাস্তা নিয়েছে।

গ্রুশকো বলেন, ‘আমাদের সকল পরিকল্পনায় এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হবে এবং আমাদের নিজ লক্ষ্য অর্জনের সকল উপায় আমাদের হাতে আছে।’

জেক সালিভ্যান বলেন, এই জেটবিমান ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনের পাইলটদেরকে প্রশিক্ষণও দিবে মার্কিন সৈন্যরা।

তিনি অবশ্য আভাস দিয়েছেন যে ইউক্রেন যেসব যুদ্ধবিমান পাবে তা শুধু আত্মরক্ষামূলক কাজেই ব্যবহার করা যাবে। রাশিয়ার ভূখন্ডের ভেতরে কোনো আক্রমণ চালানোর সক্ষমতা বা এমন কোনো সহায়তা যুক্তরাষ্ট্র দিবে না।

ইউক্রেনের আশা পূরণ
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ অভিযান শুরুর সময় ইউক্রেনের হাতে ১২০টি যুদ্ধবিমান ছিল বলে মনে করা হয়। যেগুলো প্রধানত সোভিয়েত যুগের মিগ-২৯ এবং সু-২৭ জাতীয়।

কিন্তু কর্মকর্তাদের মতে, রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতার সাথে পেরে উঠতে হলে ইউক্রেনের অন্তত ২০০ জেট বিমান দরকার। ফলে দেশটি বহু দিন ধরেই পশ্চিমা মিত্রদের কাছে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চাইছিল, যা শব্দের চেয়ে দ্বিগুণ দ্রুতগামী এবং আকাশে ও স্থলভাগে থাকা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এফ-১৬-এর মতো বিমান পেলে ইউক্রেন রুশ প্রতিরক্ষাব্যূহ অতিক্রম করে আক্রমণ চালাতে পারবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো জোটের বেশ কিছু দেশ ইউক্রেনকে আধুনিক জেট দেয়ার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ছিল, কারণ এতে রাশিয়ার সাথে সরাসরি সঙ্ঘাতের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ-সামগ্রী পেলেও তাদের অনুমোদন ছাড়া তারা তা তারা অন্য কারো কাছে বিক্রি বা রফতানি করতে পারে না। তাই প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এ সিদ্ধান্তের ফলে ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, নেদার‍ল্যান্ডসের মতো দেশগুলো তাদের কাছে থাকা কিছু এফ-১৬ বিমান ইউক্রেনকে দিতে পারবে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, তার দেশ ইউক্রেনের পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিতে ইচ্ছুক। তবে তারা কোনো বিমান দিবে না।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও ইউক্রেনের পাইলটদের জন্য একটি প্রশিক্ষণ-কেন্দ্র তৈরি করার কথা বলেছেন। তবে যুক্তরাজ্যের কোনো এফ-১৬ বিমান নেই।

কিয়েভ লক্ষ্য করে রুশ ড্রোন হামলা
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশটির রাজধানী কিয়েভ লক্ষ্য করে আবার রুশ ড্রোন হামলা হয়েছে।

তারা বলেন, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করছে। তবে কিয়েভের কিছু এলাকায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ড্রোনের টুকরো এসে পড়েছে এবং একটি ভবনের ছাদে আগুন ধরে গেছে।

রুশ-নিয়ন্ত্রণে থাকা মারিউপোল শহরে তিনটি জোরালো বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। মারিউপোলের নির্বাসিত পৌর কাউন্সিল বলেছে, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী শহরটির বিমান বন্দরে বিস্ফোরণ ঘটেছে। সেখানে রুশ সেনারা অবস্থান নিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এখন জি-৭ জোটের নেতাদের সাথে বৈঠক করতে জাপানে রয়েছেন।

সূত্র : বিবিসি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877